শাহাবাগ থেকে শাহিনবাগ, উপমহাদেশে মুক্তি আন্দোলনে আবারও বাঙালীর দিশা

      সংশোধিত নাগরিক বিলে রাষ্ট্রপতি রামানন্দ কোবিন্দের স্বাক্ষর পড়ার দিন থেকেই যে আন্দোলনের সুত্রপাত তা সুসংগঠিত ও দীর্ঘস্থায়ী রুপ লাভ করে  দিল্লীর শাহিনবাগের অবস্থান বিক্ষোভে।

      ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সাল ট্রাইব্যুনালের দ্বিতীয় রায়ে কাদের মোল্লাকে ৩টি অপরাধের জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ২টির জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু এতো বড় সব অপরাধের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে যারা মেনে নিতে পারেননি তারা শাহবাগে অহিংস বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করে। কবি মেহেরুন্নেসাকে হত্যা, আলুব্দি গ্রামে ৩৪৪ জন মানুষ হত্যা সহ মোট ৬টি অপরাধের ৫টি প্রমাণিত হয় এত বড় অপরাধীর 'ফাঁসীর পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদন্ড' বাস্তবে শাস্তির পরিবর্তে তাঁকে সরকারী টাকায় শেষ জীবনে আরামে জেলখানায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা এককথায় কারাদন্ডের পরিবর্তে আরামদন্ড দেয় আদালত। যা বাংলাদেশের ছাত্র-যুব সমাজ মেনে নিতে পারেনি। স্বভাবতই তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে
সাহাবাগ, বাংলাদেশ 

          তরুণ প্রজন্ম যারা আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাবলীল তাঁরা সামাজিক মাধ্যমে আন্দোলনের ডাক দেয়। সেই আন্দোলনই শাহাবাগ আন্দোলন নামে সারা বিশ্বে প্রচার পায়। যে আন্দোলনের চাপে বাংলাদেশের মৌলবাদ কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায়। যদিও পরবর্তিকালে আওয়ামী লিগ সরকারের প্রচ্ছন্ন মদতে "হেফাজতে ইসলাম" এর নেতৃত্বে বাংলাদেশে মৌলবাদ স্বমুর্তি ধারণ করে। তারপরও শাহাবাগ আন্দোলন উপমহাদেশে একটি দৃষ্টান্ত।     CAA, NPR,NRC এর বিরুদ্ধে সেই সাহাবাগের আদলেই তরুণ প্রজন্মই বিশেষ করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই প্রথম আন্দোলনের সূচনা করে, এবং সেখানে বাঙালী শিক্ষার্থীরাই নেতৃত্বে।
সাহিনবাগ, দিল্লী 
      এখানেও সেই আশার আলো জাগানো মশাল তরুণ প্রজন্ম। এই সাহিনবাগ ভারতের মাটিতে CAA, NPR, NRC বিরোধী আন্দোলনের মডেলে পরিনত হয়েছে। বাংলাদেশের শাহাবাগ আন্দোলন ঢাকা ছাড়িয়ে খুলনা, রাজসাহী,চট্টগ্রাম,কুমিল্লা,বরিসাল,যশোহর সহ সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। শাহিনবাগের অবস্থান বিক্ষোভ ঠিক সেইভাবেই একটি আন্দোলনের ভাষা, একটি মডেল- যাকে দেখে সারা ভারত বর্ষে বিভিন্ন শহরে এমনকি মফস্বলেও অবস্থান বিক্ষোভ সংগঠিত হচ্ছ এবং এই অবস্থান বিক্ষোভগুলি 'শাহিনবাগ' নামেই আখ্যায়িত হচ্ছে। শাহিনবাগের পর পশ্চিমবঙ্গের পার্কসার্কাসে দ্বিতীয় অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। তারপর একে একে বহরমপুর, পলাশী,আসানসোল রাঁচি, মুম্বাই এবং সবগুলিকেই অবস্থান বিক্ষোভ না বলে সাধারণ মানুষ মন থেকে সাহিনবাগ নামেই অভিহিত করছে। NRC,NPR,CAA এই রাষ্ট্রীয় প্রোজেক্টে বাংলা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। প্রতিরোধ করতে সেই বাংলাকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের মতই নেতৃত্বের চালকে আসতে হচ্ছে। 

আসানসোল 
          

Post a Comment

ধন্যবাদ

Previous Post Next Post