জনগণের দাবীতে সাধারণ ধর্মঘট পালন না করার পুরষ্কার একটানা পাঁচ দিন ছুটি

        বাংলার বর্তমান সরকার সরকারী কর্মচারীদের বারবার একটানা ছুটি উপহার দিয়ে চলেছে। ক্ষমতায় আসার প্রাকমুহুর্তে দল নেতৃ ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যে বন্ধ হতে দেবেন না। তিনি কথা রেখেছেন ২০১১ সালে ক্ষমতা আসার পর থেকে সরকারী ভাবে তিনি বন্ধ আটকাবার জন্য প্রশাসনের সাথে নিজের দলকেও রাস্তায় নামিয়েছেন জনস্বার্থে ডাকা হরতাল, সাধারণ ধর্মঘট ভাঙতে। এতে বাধ্য সন্তানের মত দলীয় কর্মীরা ধর্মঘট ভাঙার জন্য শুধু খালি হাতে নয় কিছু যন্ত্রপাতিও সাথে নিয়ে ধর্মঘটিদের উপর চড়াও হতে দেখা যায়।  
         
news18.com
সৌজন্যে নিউজ১৮ডট কম
আর চাকুরী জীবিদের ভুমিকা তো আরও উত্তম। উনারা সরকারী চাকর ।  সমকাজে সমবেতন, বেসরকারীকরণ বন্ধ, স্থায়ী কাজে  চুক্তিতে কর্মী নিয়োগ বন্ধ, পেনশন ব্যবস্থা শেয়ার মার্কেটের উপর ছেড়ে না দেওয়ার দাবী সরকারী কর্মীদের সাথে সম্পর্কিত নয়। এই দাবী গুলি অন্য কোন গ্রহের মানুষদের। তাই সরকারী কর্মীরা বন্ধের দিন ধর্মঘটিদের ব্যরিকেড ভেঙে হাজিরা খাতায় সই করার জন্য অফিসের ভিতর প্রবেশ করে জোর করে। মুখের দিকে চেয়ে দেখলে তাঁদের দারিদ্রতা করুণভাবে ধরা পড়ে। একদিনের বেতন

         সরকারী উদ্যোগে আগের দিন রাতে অফিসের ভিতর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করাও চোখে ধরা পড়ে দেদার। এতে সরকারী কর্মীদের একদিনের খাই খরচ ও একদিনের যাতায়াত খরচ একসাথেই বেঁচে যায়। এতে আরও একটি উপরি পাওনা তাঁরা পায়। সেটা হল চিরাচরিত সরকারী ছুটির ক্যালেন্ডারের বাইরে বাড়তি ছুটি। 
কোনভাবেই কাটতে দিতে রাজি নয়।
           সরকার ধর্মঘটিদের বিরুদ্ধে কর্মনাশা বন্ধের অভিযোগ তোলে। শ্রমদিবস নষ্টের কথা বলে ধর্মঘট ব্যর্থ করার ডাক দেয়। সাথে পেটোয়া সংবাদ মাধ্যমও কোরাস ধরে প্রচার তুলে দেয় ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। এতে ঢাকা পড়ে যায় ধর্মঘটের দাবীগুলি।
      ধর্মঘট কেন ডাকতে হয় শ্রমিক সংগঠনগুলিকে। ক্ষমতা জাহির করার জন্যই শ্রমিক সংগঠনগুলি ধর্মঘট আহ্বান করে না। ৮ই জানুয়ারী সাধারণ ধর্মঘটের দাবীগুলি একটু অনুশীলন করলে সহজেই বোঝা যাবে শ্রমজীবী মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে বলেই তাঁরা ধর্মঘটে যোগ দিয়েছিল। আর সেই দাবীর প্রায় একশো ভাগই কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ছিল। ক্ষমতা হারানোর ব্যথায় সিপিএম রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কিছু দাবী যুক্ত করে দেয় তাঁদের স্বভাবসুলভ ঢঙে। ৮ই জানুয়ারীর সারাভারত সাধারণ ধর্মঘট কোন রাজনৈতিকের দলের আহ্বানে ছিল না, ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাক ছিল। 
            তারপরও বাংলার সরকার এই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে প্রশাসন, দলীয় কর্মী, বেতন কাটার ভয়, কর্মজীবন থেকে একদিন কেটে নেয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্মঘট ব্যর্থ করার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছে। মজার ব্যপার হল সরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত কর্মসংস্থানের জায়গা বাঁচিয়ে রাখার আন্দোলনে সরকারী কর্মীরা হাজিরা খাতায় সই করেছেন পরের দিন। আর সরকারী এই কারণেই ধর্মঘট ব্যর্থ। 
                  যাইহোক, যে সরকার শ্রমদিবস নষ্ট হচ্ছে, সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে বলে এত উচ্চস্বরে আওয়াজ তুলছে সেই সরকার কি করে একটানা এতদিন ছুটি ঘোষনা করল কোন যুক্তিতে? এতে সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় বেতন পাওয়া সরকারী কর্মীরা জনগণের কাজ না করার অধিকার পাই কিভাবে? এনআরসি কারণে আতঙ্কগ্রস্ত জনগণের কাজ এতে খতিগ্রস্ত হচ্ছে না? কাগজ পত্র ঠিক করার জন্য হন্যে হয়ে মানুষ ছুটে বেড়াচ্ছে, সেখানে সরকারী অফিস একটানা বন্ধ রাখা কোন কর্মসংকৃতির মধ্যে পড়ে? 
                    

Post a Comment

ধন্যবাদ

Previous Post Next Post