------মাটির ছবি-------------
-----দ্বারক ঘোষ
দেখছো কি গো ঐ গাঁখানি,
ঐ যে দূরের পানে----
হৃদয় আমার হারিয়ে থাকে
তারই মাটির টানে ।
ঐ মাটিতেই আব্বু আমার
ঘুমিয়ে চিরঘুমে ,
ঐ মাটিতেই আম্মু-দেহ
শেষের চুমা চুমে ।
বোনটি আমার বছর দুয়ের
ফুলকুঁড়িতে ঝরে,
শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছে
ঐ মাটিরই 'পরে ।
ঐ মাটিতেই সাত পুরুষের
বিছানাখানি পাতা,
ঐ মাটিতেই হারিয়ে আমার
জীবনপুরের খাতা ।
ঐ মাটিতেই ঈদের খুশি
সবার তরে বাটা ,
দুর্গা পুজো, রথের মেলায়
সাথির সাথে হাঁটা ।
ঐ মাটিতেই আজানসুরে
চোখ মেলতো ভোর ,
শঙ্খধ্বনি সন্ধ্যাদীপে
বরণ হ'তো দোর ।
ঐ মাটিতেই রামধনু রং
আঁকে পথের ধুলো,
রামু-শ্যামুর সাথে হাঁটা----
বাল্যবেলাগুলো ।
ঐ মাটিতেই শ্যাম-আমাদের
একই উঠানবাড়ি,
স্নেহাবৃত মায়ের আঁচল----
জড়িয়ে ছিল সারি ।
অভাব-ঘেরা ঐ মাটিতে
খাবার ছিল কম,
আত্মীয়তার হাটে ছিল
প্রাণের সমাগম ।
রামুর অসুখ পড়লে পরে
আম্মু দোয়া মাঙ্গে----
নিষ্পলকের রাত্রি শেষে
পুবের আকাশ রাঙে!
আমার কোনো খুশির খবর
কাকী পড়েমরে----
সেই খবরের বার্তা দিতে
পাড়া মাথায় করে ।
ঐ মাটিতে এমন ছবি----
নানান রঙে আঁকা,
থরে থরে সেজে আছে
হৃদির পটে রাখা ।