কেন গ্রামবাসিরা পাঁচকিমি রাস্তা মেরামত করতে বাধ্য হল ?

   
Why the villagers repaired the road

    নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং নওদা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এর নিকট কোনরকম সাহায্য না পাওয়ায় প্রায়ই ৫ কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করার কাজে নেমে পড়ল গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে নওদা থানার অন্তর্গত নওদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রঘুনাথপুর গ্রামে। 
    
    রাস্তাটি মূলত মাঠের কাজে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । অন্যতম উর্বর মৃত্তিকা হওয়ায় নওদার নামো মাঠ বলে খ্যাত এই মাঠে পাট গম এবং ব্যাপক আকারে পিয়াজ চাষ হয়ে থাকে। কিন্তু ফসল তোলার সময় চাষিরা পরে সবচেয়ে বড় বিপদে । রাস্তা খারাপ এবং বিপদজনক হওয়ায় চাষিরা ফসল তোলার সময়  ট্রাক্টর ব্যবহার করতে পারে না বললেই চলে। কোন কোন সময় ট্রাক্টর উল্টে গিয়ে প্রাণহানির ঘটনা মত ঘটনা ঘটেছে।  অনেকে এখনো আহত অবস্থায় বাড়িতে পড়ে আছে।

   এই রাস্তা মেরামতের জন্য স্থানীয় নির্বাচিত পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে নওদার এমএলএ এবং এই পঞ্চায়েতেরই বাসিন্দা এমপি কে জানানো সত্ত্বেও কোনরকম সুরাহা হয়নি এলাকার চাষীরা উদ্যোগী হয়ে "রাস্তা বাঁচাও বাঁচাও কমিটি" গড়ে তুলে গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি নওদা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মহাশয কে দিয়েছেন। এরপরেও কোনরকম আশার আলো না দেখে রাস্তা "বাঁচাও কমিটি"  গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় এক লক্ষ টাকার তহবিল গড়ে তোলে রাস্তা মেরামতের কাজে নেমে পড়ে। 
      "রাস্তা বাঁচাও কমিটির" সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন নওদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫মাইল থেকে পোড়াডাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা কৃষি কাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাস্তা টি ভগ্ন অবস্থায় থাকার কারণে ফসল তোলার সময় চাষীদের পড়তে হয় মহাবিপদে। ট্রাক্টর এ রাস্তায় চলতে না পারার ফলে মাথায় করে ফসল তুলতে হয় এতে চাষীদের খরচ অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে যায়। কোনভাবে ট্রাক্টর প্রবেশ করলেও মাঝে মাঝে ট্রাক্টর পাল্টি খায়। আর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই, মাঠের ফসল মাঠেই পড়ে থাকে। এইরকম কঠিন বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে আমাদের গ্রামের চাষিরা চাষবাস করে চলেছে। রাস্তাঘাট খারাপ হওয়ায় চাষিরা ব্যাপক লোকসানের শিকার হয়। এমতাবস্থায় আমরা বারবার নওদা পঞ্চায়েত, নওদার এমএলএ, এমপি, নওদার ভিডিও মহাশয় কে লিখিত আকারে জানানো সত্ত্বেও কোন রকম কাজ হয়নি।
      ফলে আমরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এবড়োখেবড়ো রাস্তা জেসিবি দিয়ে এবং কায়িক শ্রম দিয়ে সমান করার কাজ চালাচ্ছি  এবং এবাবদ আমাদের  ১ লক্ষ টাকার তহবিল সংগ্রহের কাজও চলছে। গ্রামবাসীরা স্বেচ্ছায় ২০০টাকা ৩০০ টাকা এমনকি ৫০০ টাকা পর্যন্ত এই তহবিলে সাহায্য করছেন। তবে এইভাবে গ্রামবাসীরা কাজ করে আমাদের সমস্যার স্থায়ীসমাধান হবে না আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন রাখছি যত দ্রুত সম্ভব এই রাস্তা কে ঢালাই বা পিচ রাস্তা করে সব মরসুমে ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলুক।

  আশ্চর্যের বিষয় গ্রামপঞ্চায়েত থেকে রাজ্যের প্রত্যেক স্তরেই শাসক তৃণমুল কংগ্রেস ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত তারপরেও চাষের কাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ এই রাস্তার এই করুণ পরিস্থিতি কেন এবং কবে এথেকে পরিত্রাণ মিলবে সেটা নওদার প্রশাসন বলতে পারে। 

Post a Comment

ধন্যবাদ

أحدث أقدم