আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

    ১৯৫২ সালের  ২১শে ফেব্রুয়ারী ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। তৎকালীন পাকিস্তানে সর্বাধিক লোকের মুখের ভাষা বাংলা হওয়া স্বত্বেও উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা করে পাকিস্তান সরকার।  মাতৃ ভাষা প্রতিষ্ঠার দুর্বার আন্দোলন পাকিস্তানি শাসকদের আতঙ্কিত  করে তোলে ।  সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। পরদিন ২২শে ফ্রেব্রুয়ারী (১৯৫২) এই হত্যার প্রতিবাদে সারা দেশের সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে আসে। ভাষা শহীদদের স্মৃতিকে অমর করে ধরে রাখতে সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল হোস্টেল প্রাঙ্গণে স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলে। ২৬শে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানী পুলিশ সেই স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙ্গে দেয়।
এতে ভাষা আন্দোলন আরও গতিলাভ করে। 

     
একুশের আন্দোলনের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল একটাই—দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের মাতৃভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদাদানের দাবি আদায় করা। কিন্তু এই ভাষা আন্দোলনই স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার অন্যতম সোপান। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা নিয়ে বাংলাভাষী অঞ্চলকে শাসন  ও শোষণ চালিয়ে যাচ্ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে উর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে চাইছিল।  যার নাগপাশ থেকে আপামর বাঙালি মুক্তি চাইছিল। ভাষার প্রতি আবেগ ও পাকিস্তানী খান সেনাদের অত্যাচার থেকে বাঁচার আকুতি শেষ পর্যন্ত ৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দেয়। এতে বাংলা ভাষা অস্তিত্ব সঙ্কট থেকে রক্ষা পায়। 


   ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ভাষা শহীদদের সম্মান জানিয়ে প্রতি বছর ভাষা দিবস হিসাবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ পালন করে আসছে। ১৯৯৯ সালে ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেয় । 

Post a Comment

ধন্যবাদ

أحدث أقدم